মৌলভীবাজার মহিলা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শাহেদা আক্তারের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি, ঘুষ গ্রহণ ও বেতন-ভাতা আত্মসাৎ এর অভিযোগে তার বিচারের দাবীতে মহিলা পরিষদ মৌলভীবাজার উদ্যোগে গতকাল ২৯ জানুয়ারি বুধবার বিকালে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সামনে এক মানবববন্ধন কর্মসুচি পালিত হয়।
মহিলা পরিষদের সদস্য রোকসানা চৌধুরীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ভুক্তভোগী সনজিতা সিনহা, মুন্না, সুজিতা নুসরাত, জিম্মা প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দীর্ঘ সাড়ে আট বছর ধরে জেলা কর্মকর্তা না থাকায় শ্রীমঙ্গল উপজেলা কর্মকর্তা শাহেদা আক্তার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। এর বাইরেও তিনি জুড়ী ও শ্রীমঙ্গল ডে-কেয়ারের দায়িত্বে রয়েছেন। এ চারটি অফিস থেকেই লুটপাট করছেন শাহেদা আক্তার। তিনি প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতার টাকা আত্মসাৎ, অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে টাকা উত্তোলন, কাঁচামাল কেনার নামে প্রশিক্ষণার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায়সহ ভর্তি ফরমের টাকা সিন্ডিকেট করে ভাগবাটোয়ারাসহ দুর্নীতির মহোৎসব চলছে এ কার্যালয়ে।
শ্রীমঙ্গল ডে-কেয়ার সেন্টারে বাচ্চাদের খাবারের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। পাইলট প্রকল্পের আওতায় জুড়ী উপজেলায় আইসি ভিজিটি মহিলাদের এককালীন ২০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা। কিন্তু তাদের টাকা কম দিয়ে এ প্রকল্প থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকা লুট করেছেন তিনি। জেলা কার্যালয়ে ডিসপ্লে সেন্টারের ডেকোরেশনের জন্য পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ এলেও নামকাওয়াস্তে কাজ করে অর্ধেকের বেশি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
জেলা কার্যালয় এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করছেন শাহেদা আক্তার ও অফিস সহকারী দেলোয়ার হোসেন। চাকরির শুরু থেকে ২৪ বছর অফিস সহকারী দেলোয়ার মৌলভীবাজার কার্যালয়ে কর্মরত। দেলোয়ার অফিস সহকারী হয়েও হিসাবরক্ষকের যাবতীয় কাজ করছেন। অথচ অফিসে হিসাবরক্ষক পদে মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন ও মোঃ লতিফুল ইসলাম নামে দুজন রয়েছেন।
দুর্নীতি করে শাহেদা আক্তার শ্রীমঙ্গল উপজেলার রামনগর মণিপুরী পাড়ায় নির্মাণ করেছেন বহুতল ভবন এবং দেলোয়ার নিজ বাড়িতে পাকা ঘর করেছেন। প্রাকটিক্যালের কাঁচামাল কেনার কথা বলেও প্রশিক্ষণার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হচ্ছে। অথচ সংশ্লিষ্ট ট্রেডের কাঁচামাল কেনার জন্য সরকারি বরাদ্দ রয়েছে।
বক্তারা বলেন, জেলায় ৭২টি কিশোর-কিশোরী ক্লাব চলমান। সপ্তাহে শুক্র-শনিবার ৩০ জনকে এ ক্লাবে সাংস্কৃতিক নানা বিষয় শেখানোর কথা। কিশোর-কিশোরীদের ক্লাবমুখী করার জন্য প্রতিদিন প্রত্যেক সদস্যের জন্য ৩০ টাকা মূল্যের স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিগুণ সম্পন্ন নাস্তা বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু কিশোর-কিশোরীদের নাস্তাতেও হরিলুট করছেন কর্মকর্তারা। স্বাস্থ্যসম্মত নাস্তার পরিবর্তে দেওয়া হচ্ছে নিম্নমানের নামকাওয়াস্তে খাবার। ক্লাবে ৩৫ প্যাকেট নাস্তার পরিবর্তে দেওয়া হচ্ছে ১৫-২০ প্যাকেট। এভাবে প্রশিক্ষণার্থীদের নাস্তার টাকা আত্মসাৎ করা হচ্ছে।
ভুক্তভোগী সনজিতা সিনহা বলেন, আমি প্রশিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলাম। আমার ৬ মাসের বেতন না দিয়ে উক্ত টাকা আত্মসাৎ করেছেন।