১৬ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ রাত ৪:৫১
সংবাদ শিরোনাম

সিলটিভি’র স্বপ্নচারী তারুণ্য অনুষ্ঠানে আবদুল কাদির জীবনের স্বাক্ষাৎকার

আকাশ বাংলা ডেস্ক
  • আপডেট বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
  • ৯১ বার পঠিত
সিলেট বিভাগের জনপ্রিয় অনলাইন টিভি সিলটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বপ্নচারী তারুণ্য অনুষ্টানে আমন্ত্রন জানানো হয় সিলেটের প্রথম ইংরেজি ম্যাগাজিন দ্য আর্থ অব অটোগ্রাফ সম্পাদক, তরূণ সাংবাদিক ও ছড়াকার আবদুল কাদির জীবনকে। দিনটি ছিল শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২০ সাল। সাক্ষাৎকারটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
ফাইজা রাফা : স্বপ্ন । স্বপ্ন একটি ছোট শব্দ। স্বপ্ন আমরা সবাই দেখি এবং তা পূরণ করার চেষ্টা করি। সিল টিভির নিয়মিত আয়োজন স্বপ্নচারী তারুন্য অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগতম জানাচ্ছি আমি ফাইজা রাফা। আজকের অনুষ্টানটি রিফাত এন্ড কোম্পানী সিলেটের সৌজন্যে। স্বপ্নচারী তারুণ্য নিয়মিত অনুষ্টানে উপস্থিত আমাদের অতিথি আব্দুল কাদির জীবন যিনি নিজের স্বপ্নের কথা জানাবেন । চলুন দর্শক আমরা তার সাথে কথা বলি এবং তার স্বপ্ন সম্পর্কে আমরা জানি। তিনি কি করেন সে সম্পর্কেও আমরা জানি।
ফাইজা রাফা : আপনাকে অনেক অনেক শুভে”ছা জানচ্ছি সিল টিভির অফিসের পক্ষ থেকে।
আবদুল কাদির জীবন : আপনাকে ও অনেক অনেক শুভেচ্ছা যানাচ্ছি আমাকে এখানে আমন্ত্রন জানানোর জন্য।
ফাইজা রাফা : আপনি কি করেণ?
আবদুল কাদির জীবন : প্রথমে আমি আমার পরিচয়টা দিচ্ছি, আমি আবদুল কাদির জীবন। আমার বাড়ি সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার দক্ষিন সুনামগঞ্জ উপজেলার ৬ নং পূর্ব বীরঁগাও ইউনিয়নের বীরগাঁও গ্রামের।
সিলেটের প্রথম প্রাইভেট বিশ^বিদ্যালয় লিডিং ইউনিভার্সিটি ইংরেজী বিভাগ থেকে বিএ অনার্স সম্পন্ন করেছি । পাশাপশি সাহিত্য সংস্কৃতি ইতিহাস ঐতিহ্য ও সমাজ বিষয়ক ইংরেজী ম্যাগাজিন The earth of Autograph নিয়মিত প্রকাশ করে আসছি। তাছাড়া সিলেটের বিভিন্ন সাহিত্য সংস্কৃতি সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত আছি। এছাড়া ছড়া, কবিতা, প্রবন্ধ, গল্প, শিশু সাহিত্য নিয়ে কাজ করছি।
ফাইজা রাফা : মানুষের তো অনেক স্বপ্ন থাকে । লেখা লেখিতে আশার ই”ছা কেন কারণটা কি জানতে পারি?
আবদুল কাদির জীবন : পৃথিবীর প্রতিটা মানুষের স্বপ্ন থাকে। স্বপ্ন আছে বলেই মানুষ বেচে আছে। স্বপ্ন না থাকলে সে কি নিয়ে বাঁচবে ? প্রত্যেকটা মানুষের আলাদা আলাদা স্বপ্ন আছে। ছোট বেলায় আমি যখন স্কুলে বাংলা বই পড়ি তখন অনেক কবিদের কবিতা ও বিভিন্ন লেখা পড়ি যেমন- কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, পল্লী কবি জসীম উদ্দিন, বেগম রোকেয়া শাখাওয়াত হোসেন, বন্ধে আলী মিয়া, তখন আমাকে খুব অনুপ্রেরণা দেয়। আর তখন থেকেই মূলত লেখা লেখির একটা একটা টান আমার মাঝে কাজ করত। সেটা বাস্তবে রুপ দেয় ২০১২ সালে ‘মা’ কবিতাটি সিলেটের কাজির বাজার পত্রিকায় প্রকাশের মাধ্যমে। ছোট বেলায় আমার লেখা লেখির একটা অভ্যাস ছিল আর কি।
ফাইজা রাফা : লেখালেখি যে করেণ কেমন লাগে আপনার?
আবদুল কাদির জীবন : বর্তমান সময় লেখালেখি করতে আমার অনেক ভালো লাগে। যদিও অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করি তারপরও লেখালেখি করে যাচ্ছি। যেহেতু লেখাগুলো স্থানীয় ও জাতীয় ভাবে লেখাগুলো প্রকাশ হচ্ছে এ জন্য লেখালেখি খুব ভাল লাগে।তারচেয়ে বেশী ভাল লাগে যখন কেউ আমাকে বলে তেমার এই লেখাটা সুন্দর হয়েছে। তখন সত্যি অনেক ভালো লাগে। প্রতিটি লেখা দেশ, সমাজ এবং মানুষের উপকারীর জন্য লেখতে চাই।
ফাইজা রাফা : কোন ধরনের লিখা আপনি মুলত লেখেন?
আবদুল কাদির জীবন : আমি মূলত শিশু সাহিত্য নিয়ে বেশি লেখালেখি করি। ছোটদের নিয়ে ছড়া কবিতার পাশাপাশি সমাজের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রবন্ধ, গল্প লেখি।
ফাইজা রাফা : তো হঠাৎ শিশু সাহিত্যের প্রতি আগ্রহ কেন? আরো তো বিভিন্ন বিষয় আছে। যেমন- বাংলা সাহিত্য ও ইংরেজি সাহিত্য ছিল, রাজনীতির উপরও বই লেখা যেতো।
আবদুল কাদির জীবন : শিশু সাহিত্য আর রাজনীতি সাহিত্য সব সাহিত্যের মূলেই শিশু সাহিত্য। কারণ আমরা যখন ছোট বেলায় লেখাপড়া করি তখন কিন্ত আমরা প্রায় ছোট ছিলাম। ছোট থেকেই কিন্তু আমরা বড় হয়েছি। শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। এই শিশুরাই যখন তারা বই পড়ে কিংবা বই থেকে ছড়া কবিতা লিখে ঠিক তখন থেকে লেখালেখির উপলব্দিটা আসে। অনেক বড় বড় লেখকরা শিশু সাহিত্য নিয়ে কাজ করতে আনন্দ পান । আমিও আনন্দ পাই।
ফাইজা রাফা : মূল কথা হলো শিশুদের নিয়ে আপনার কাজ করতে খুব ভালো লাগে।
আবদুল কাদির জীবন : ঠিক তাই।
ফাইজা রাফা : এখন পর্যন্ত আপনার কোন বই বা ম্যাগাজিন প্রকাশ হয়েছে কী ?
আবদুল কাদির জীবন : আমি শিশু সাহিত্য নিয়ে কাজ করি। তাই আমার প্রথম বই প্রকাশ হয়েছে ২০১৯ সালে। যেটি শিশু সাহিত্যের উপর। বইয়ের নামটি হলো ‘দুঃখ নাচে সুখের কাছে’। বইটি থেকে আমি অনেক সারা পেয়েছি। তখন উপস্থাপিকা বইটি দর্শককে হাতে নিয়ে দেখান ।
ফাইজা রাফা : বইটি কবে প্রকাশ হয়েছে এবং বইটি থেকে কেমন সারা পেয়েছেন?
আবদুল কাদির জীবন : আলহামদুলিল্লাহ। প্রথম বই হিসেবে আমি অনেক সারা পেয়েছি। তখন আমার বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, লেখক শ্রেণিসহ সর্বমহল থেকে আমাকে অনেক প্রেরণা, উৎসাহ ও উদ্দীপনা পেয়েছি । পাঠকদের কাছ থেকে অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। আমি দেখি যখন আমার ছাত্র-ছাত্রী, চতুর্থ শ্রেণির তারা যখন বইটি পড়ে এবং আমাকে বলে যে স্যার আপনার বইটি ভালো করে পড়েছি এবং লেখাগুলো অনেক সুন্দর হয়েছে। তখন আমার খুব ভালো লাগে। সে আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।
ফাইজা রাফা : এই বই ছাড়া আপনার আর কোন বই বের হয়েছে কি?
আবদুল কাদির জীবন : আমি যখন লিডিং ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হই। তখন থেকে আমি দ্য আর্থ অব অটোগ্রাফ ইংরেজী ম্যাগাজিন প্রকাশ করি। অবশ্যই এটা আমি বাংলা ভাষা শুরু করেছিলাম ২০১৪ সালে একটি চার পাতা লিটন ম্যাগ পত্রিকা হিসেবে। ভার্সিটিতে ভর্তি হবার পর মনে হলো পত্রিকাটি বাংলা থেকে ইংরেজি করার। আমার উদ্দেশ্য হলো আমি দেশ, সমাজ এবং মানুষের ভাষা ইংরেজিতে প্রকাশ করবো। ঠিক তখন থেকেই ইংরেজি ম্যাগাজিন প্রকাশ করি।
ফাইজা রাফা : বাংলা সাহিত্য রেখে হঠাৎ ইংরেজী সাহিত্যের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হলো কেন?
আবদুল কাদির জীবন : খুব সুন্দও একটা প্রশ্ন। আসলে আমরা সবাই জানি English is an international Language. প্রত্যেকটি দেশের মানুষ এই ভাষা সম্পকে কিছুনা কির্ছু জানে। আর আমি ইংরেজী ভাষা নিয়ে পড়েছি। ইংরেজী ভাষা নিয়ে আমি ২৪ ঘণ্টা কাজ (পড়াশোনা) করছি। সেখান থেকে আমার উৎসাহ এবং আগ্রহ সৃষ্টি হয়। আমি যখন উইলিয়াম শেক্সপিয়ার, জন মিল্টন, জনডান পি.বি.শেলী তাদের কবিতা ও লেখা পড়ি তখন আমার খুব ভালো লাগে। সেখান থেকেই আমার প্রেরণা। তারপর আমি আমার স্যারের সাথে আলাপ করি যে, ‘আমি একটা বাংলা পত্রিকা প্রকাশ করি। আমি চাচিছ এখন ইংরেজি সাহিত্যে প্রকাশ করতে। তখনকার ইংরেজি বিভাগের হেড ছিলেন মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম স্যার।তারপর স্যার আমাকে উৎসাহ দিলেন প্রকাশ করার। ঠিক তখন থেকে আমি ইংরেজি ম্যাগাজিন প্রকাশ করার কাজটি শুরু করি ।
ফাইজা রাফা : দর্শক আপনার দেখতে পেরেছেন লেখক ইতিমধ্যেই ৯টি বই প্রকাশ করেছেন । তো নিশ্চই আপনি এগুলোর মধ্যে গণ্যমান্য ব্যক্তির লেখা এনেছেন । এই লেখাগুলো আপনি কিভাবে সংগ্রহ করেণ?
আবদুল কাদির জীবন : আমি বুঝতে পেরেছি আপনার প্রশ্ন। প্রথম সংখ্যা বের করতে আমার অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। তার পর দ্বীরে দ্বীরে আমার অনুকুলে চলে আসে। সেটা সবার সাথে ভালো সম্পর্কের মাধ্যমে তৈরী হয়েছে। আমার ইংরেজি বিভাগ সহ সিলেটের প্রতিটি ইউনির্ভাসিটির স্যার মেডামের সাথে যোগাযোগ রাখি এবং তাদের কাছ থেকে লেখা সংগ্রহ করি । যদিও একটা ম্যাগাজিনর বের করতে অনেক কষ্টের কাজ। তারপরও লেগে থাকলে অসম্ভব নয়। এই প্রথম প্রথম আমি স্যার মেডামদেরকে বলতাম যে, আপনারা যদি আমাকে লেখা দেন তাহলে আমি অনেক উৎসাহ ও সাহস পাবো। তখন তারা লেখা দিতেন । তারপরও এক পার্টি ছিল আমার শত্রু। তারা চাইতো না আমি এটা বের করি। অন্যদিকে কিছু ফ্রেন্ড সব সময় আমাকে সহযোগীতা করেছে। আমাকে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা দিয়েছে। তারা সবসময় আমাকে সাপোর্ট দিয়েছে ম্যাগাজিন প্রকাশ করার জন্য।
ফাইজা রাফা : আপনি কোন পত্রিকায় লেখালেখি বা কাজ করেণ কী ?
আবদুল কাদির জীবন : আমি কোন একক পত্রিকায় লেখালেখি করেনি বা করছি না। পত্রিকায় লেখালখি বলতে বিভিন্ন সময় আমার লেখা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।স্থানীয়, জাতীয় পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে প্রকাশ হয়েছে অনেক লেখা। যেমন দৈনিক যায় যায় দিন, দৈনিক ইত্তেফাক, জনকণ্ঠ, সংগ্রাম পত্রিকায় আমার ছড়া প্রকাশিত হয়েছে।
ফাইজা রাফা : যখন আপনার লেখা প্রকাশিত হয়, তখন আপনার অনুভূতিটা কেমন লাগে?
আবদুল কাদির জীবন : এক কথায় বলতে অনেক ভাল লাগে। জাতীয় দৈনিক দেইলি সানে যখন আমার ইংরেজি আর্টিকেল প্রকাশ হয় তখন যে আনন্দ হয়েছিল ঠিক সেটা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। ঢাকা থেকে প্রকাশিত প্রায় সাতটি ইংরেজি ম্যাগাজিনে আমার লেখা প্রকাশ হয় ঠিক তখন খুব ভালো লাগে। তাছারা আমি বাংলায় ও সমানভাবে লিখছি। বই প্রকাশ হচ্ছে, বিভিন্ন পাঠকরা আমার লেখা বই সংগ্রহ করছে। তখন অবশ্যই ভালো লাগে এবং ভাল লাগার কথা।
ফাইজা রাফা : এই যে আপনি কাজগুলো করছেন, আবার বলছেন যে, আপনার শত্রু আছে। আপনার এই কাজগুলো করতে ভাল এবং মন্দ বিষয়গুলো যদি শেয়ার করতেন।
আবদুল কাদির জীবন : আজকের সাক্ষাৎকারের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর প্রশ্ন এটা। আমরা জানি প্রত্যেকটা মানুষ তার সফলতা অর্জন করতে গিয়ে অনেক বাধার সম্মুখিন হয়। শুধু আমার জীবনে নয়। আমি যখন এই ম্যাগাজিন বের করি তখন অনেক মানুষের কাছে গিয়েছি সহযোগিতার জন্য। কিন্তু বেশির ভাগ লোকের কাছে সহযোগিতা পাইনি। কম সংক্ষক লোকের সহযোগিতা পেয়েছি। আমার প্রিয়জনের কাছ থেকেও আমি সার্পোট পাইনি। আমার লোকেরা আমাকে নিয়ে মশকারি করেছে এবং করছে। যেমন তারা বলে, আমরা বাঙালি আর নিয়ে সে নিয়ে এসেছে ইংরেজি। আমরা জানি বাংলাদেশের প্রায় ২৫টি জাতীয় দৈনিক ইংরেজি অনলাইন এবং প্রিন্ট মিডিয়া প্রকাশিত হয়। এখানে আমি মাত্র একটি ছোট লিটল ম্যাগ প্রকাশ করছি। আমি একটি ঘটনা আপনাকে বলি। প্রথম সংখ্যা যখন বের করি, আমার ইংরেজি বিভাগের হেড স্যারের সাথে পরামর্শ করে আমি একটি প্রকাশনা অনুষ্টান করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। অনেক বড় একটি অনুষ্টান ছিল। এখানে আমার স্যার মেডাম থেকে শুরু করে ভার্সিটির অনেকে থাকার কথা ছিল। দুটি টিভি লাইভ দেওয়ার কথা ছিল। ভার্সিটির বাহির থেকে অনেক লোক সমাগমের কথা ছিল। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, অনুষ্ঠানের দিন স্যার মেডাম সবাই এসেছেন। আমি আমার ক্লাসমিট সহ সবাই এসেছি। অনুষ্ঠান ৩ টার সময়, ২টার সময় ভিসি স্যার না করে দিলেন। তিনি থাকতে পারবেন না। এখন বুঝতে পারছেন অনেক কষ্ট করে এতো কিছু আয়োজন করলাম আর আর সফল হতে পারলাম না। মনের মাঝে অনেক দুঃখ রয়ে গেল।
ফাইজা রাফা : ক্যানসেল হওয়ার পেছনে কারণটা কী ছিল?
আবদুল কাদির জীবন : ক্যানসেল হওয়ার পেছনে মূল কারণটা আমি বলতে পারব না। তার পরও কিছুটা বললে আপনি বুঝতে পারবেন। আমি আগেই বলেছি, কিছু মানুষ বা ব্যক্তি আমার পক্ষে আর, আর কিছু ব্যক্তি আমার বিপক্ষে। ট্যাকনিক্যাল কিছু প্রবলেম ছিল। যার কারণে আমি প্রকাশনা অনুষ্ঠানটি করতে পারিনি। সেদিন আমার মনে প্রচুর কষ্ট ছিল। কারণ ম্যাগাজিন যে সম্পাদনা করে এবং প্রকাশ করে সে জানে কতটুকু টেনশন নিয়ে কাজ করতে হয়।
যাই হোক চার বৎসর পরে গত ডিসেম্বর মাসে আমার ম্যাগাজিন ৯ম সংখ্যা প্রকাশিত হয়। আমি একদিন দেখলাম আমাদের ইউনিভার্সিটিতে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ইউটউবে জনপ্রিয় ব্যক্তি রুবাইয়াত ফেরদৌস এসেছেন একটি অনুষ্টানে। সে সময় আমি আমার ম্যাগাজিনের টিমকে নিয়ে সেখানে হাজির হই। ভিসি স্যার যখন অতিথি স্যারকে নিয়ে বের হলেন তখন আমরাও রেডি ম্যাগাজিন নিয়ে মোড়ক উন্মোচন করার জন্য। সেদিন সত্যিই অনেক ভালো লেগেছিল। ভিসি স্যারের প্রশংসা করলে কম হবে। সত্যি সেদিন অতিথিকে দেখে সব দুঃখ বেদনা ভুলে গিয়েছিলাম। ভিসি স্যার বললেন, জীবন সবার হাতে ম্যাগাজিন দিয়ে দাও। তো আমি সবার হাথে হাথে ম্যাগাজিন দিয়েছিলাম ছিলাম এবং সবাই খুশি হলেন। এমনকি অতিথি স্যার আমার খুব প্রশংসা করলেন।
ফাইজা রাফা : এই যে আপনি অনেকের কাছে সাপোর্ট পেলেন আর অনেকের কাছে সাপোর্ট পেলেন না, তো সেটাকে আপনি কিভাবে রিকভার করেণ?
আবদুল কাদির জীবন : আমরা সবাই জানি কারো জন্য যদি এক রাস্তা বন্ধ হয়ে যায় মহান আল্লাহ তার জন্য আরো দশটি রাস্তা খুলে দেন। আমি সেটা believe করি । আপনি অবশ্যই জানেন হেরি পটার কে ছিলেন। একজন জনপ্রিয় শিশু সাহিত্যিক জে.কে.রাওলিন। এই জে.কে.রাওলিন ১২ জনের কাছে গিয়েছিল সাপোর্ট এর জন্য। কিন্তু তের নাম্বার জন তাকে হতাশ করেনি। আমিও সেটা বিশ্বাস করি যে, যদি আমি একজনের কাছে সাহায্য না পাই, তাহলে আমি আরেক জনের কাছে সাহায্য পাইবো। যতক্ষন না আমার কাজ সফল হয়েছে বা আমি আমার সাপোর্টার ব্যক্তি পেয়েছি। ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে যে, Failure is the pillar of success এই থিউরিটা সবচেযে বেশি কাজে লাগে আমার।
ফাইজা রাফা : আপনার এই ম্যাগাজিন The Earth of Autograph এটা এখন পর্যন্ত কোথায় কোথায় প্রকাশিত হয়েছে? বা আমরা এটা কোনো বইয়ের দোকানে খুজলে পাব কি? চাইলে আমাদের দর্শকদের বলতে পারেন কোথায় কোথায় পাওয়া যায়।
আবদুল কাদরি জীবন : The Earth of Autograph (দ্য আর্থ অব অটোগ্রাফ) ম্যাগাজিনটি জসীম বুক হাউজ, আম্বরখানা, মারুফ লাইব্রেরী, জিন্দাবাজার রাজা ম্যানশনে পাওয়া যাবে। তাছাড়া পড়ার জন্য কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ (কেমুসাস) লাইব্রেরী, সহকারী গ্রন্থাগার লাইব্রেরী, রিকাবী বাজার, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরী ও অনেক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল & কলেজের লাইব্রেরী ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরীতে সংরক্ষিত আছে।
ফাইজা রাফা : এই ম্যাগাজিনের মাঝে বিশেষায়িত কি? এটা পড়লে আমারা কি কি বিষয় জানতে পারবো ?
আবদুল কাদরি জীবন : দ্য আর্থ অব অটোগ্রাফ হলো সাহিত্য-সংস্কৃতি, ইতিহাস- ঐতিহৃ ও সমাজ বিষয়ক ইংরেজি ম্যাগাজিন। এখন তো বুঝতে পারলেন ম্যাগাজিনের মূল থীম বা বিষয়। তাছাড়া একান্ত Specific করে যদি বলি তা হলো- ছড়া, কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, বাইওগ্রাফি, ইন্টারভিউ, স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নিউজ ইত্যাদি বিষয়গুলোকে আমরা প্রাধান্য দেই। যে কোন ব্যক্তি যদি আমাদের মেইলে লেখা পাঠায় তাহলে আমরা এগুলো প্রকাশ করি। আপনি দেখে থাকবেন প্রতিটি সংখ্যা আমরা একেক জনের সাক্ষাতকার নেই। প্রথম সংখ্যায় সাক্ষাতকার প্রকাশ করি বিখ্যাত লেখক মোহাম্মদ জাফর ইকবালের। পরের সংখ্যায় আমরা সাক্ষাৎকার নিয়েছিলামলিডিং ইউনিভার্সিটির ভিসি ডক্টর মোহাম্মদ কামরুজ্জামান চৌধুরীর, তারপরে সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম কেমুসাস এর সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাহমুদ রাজা চৌধুরী। যদি আমরা সুযোগ করতে পারি তাহলে আমরা আগামী সংখ্যার জন্য সাক্ষাৎকার নিবো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধূরী নাদল’র। যেহেতু আমাদের আগামী সংখ্যা (মুজিব বর্ষ) তাই উপযোক্ত ব্যক্তি হিসাবে select করেছি।
ফাইজা রাফা : সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে তাদের কাছ থেকে খুব সারা পান, তাই না?
আবদুল কাদরি জীবন : অবশ্যই খুব সারা পাই । সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে high classification ব্যক্তিদের মধ্য ম্যাগাজিনের সেতুবন্ধ তৈরী হয়।
ফাইজা রাফা : ইংরেজী সাহিত্যে তো অনেকের ভয় থাকে। অনেক সময় দেখা যায় ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের ভয় থাকে ইংরেজী সাহিত্যের কিছু লিখতে ও বলতে। তো The Earth of Autograph এর মাধ্যমে কি আমরা ইংরেজি ভয়টা দুর করতে পারবো?
আবদুল কাদরি জীবন : আপনি দেখবেন ম্যাগাজিন যখন পড়বেন সব লেখাগুলো easy language দিয়ে লেখা। কিছু কিছু আছে আবার hard language দিয়ে লেখা। তো এখানে both writer বা উভয় লেখক পাচ্ছে। এখানে মজার বিষয় হলো পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্ররী ও লিখছে। দশম শ্রেণীর একজন ও লিখছে আবার ইউনিভার্সিটির একজন ছাত্রও লিখছে। আপনার মনে আসতে পারে তারা যদি লিখতে পারে আমি কেন পারবো না? তখন দেখবেন নিশ্চই সে পারবে কারণ তার চেষ্টা আছে। ইংরেজি শিখলেই হয় না কাজে লাগাতে হয়। সৃজনশীল কিছু করতে হয়।
ফাইজা রাফা : এতক্ষন ধরে আপনার লেখালেখি নিয়ে আলোচনা করলাম, লেখালেখি নিয়ে আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী?
আবদুল কাদরি জীবন : এ.পি. কে আবুল কালাম বলেছিলেন, ‘The dream is not that you see in sleep, the dream is which does not let you sleep’ অর্থাৎ স্বপ্ন সেটি নয় যেটি তুমি ঘুমিয়ে দেখ, স্বপ্ন সেটি যেটি তোমাকে ঘুমাতে দেয় না। আমার এমন একটি স্বপ্ন আছে যেটি আমাকে ঘুমাতে দেয় না। আর আমার ঘুমও হয় না। কারণ আমার স্বপ্ন এখনও পূরণ হয় নি। আপনি শুনে থাকবেন বিশ্ববিখ্যাত কথা সাহিত্যিক আব্দুল্লাহ আবু সাইদ, তিনি তার একটি বইয়ের নাম দিয়েছিলেন ‘‘মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়’’। এভাবে অখন্ডিত ঢাকা সিটির সাবেক মেয়র, জনপ্রিয় ব্যক্তি আনিছুল হক, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সমাবতর্ন অনুষ্টানে বলেছিলেন যে, ‘মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়’’ এবং মানুষ স্বপ্ন ছাড়া বাছতে পারে না। এই দৃষ্টি কোন থেকে আমিও বলি, আমার সামনে অনেক স্বপ্ন আছে এটা আমাকে পূরণ করতে হবে। এটা পূরণ করার জন্য আমাকে প্রাণপণ চেষ্টা করতে হবে। আপনি জানেন ডি.এস লরেন্স বলেছেন, যারা খোলা চোখে স্বপ্ন দেখে তিনি তাদেরকে dangerous মানুষ বলে আখ্যায়িত করেছেন। কারণ তারা স্বপ্ন পূরণ না করলে তাদের ভোর হয় না। আপনি জানেন, বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাবান সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, তিনি যে স্বপ্নের কথা বলেছিলেন, সেটা পূরণ হয়েছে। তিনি বলেছিলেন আমি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হবো, তিনি হয়েছেন। এটা তার কর্মের ফল, পরিশ্রমের ফল। আমি আব্দুল কাদির জীবন, আমিও একটি স্বপ্ন দেখি। আমিও আমার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করি। স্বপ্ন আমাকে বাচিয়ে রেখেছে।
২০২০ সালের স্পীরিং সেমিস্টার (Spring Semester) লিডিং ইউনিভার্সিটির থেকে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যের উপর বি. এ. অনার্স (সম্মান) সম্পন্ন করেছি। তাছাড়া ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে হাদিস বিভাগে কামিল (মাস্টার্স) শেষ করেছি। দুই দিকে আমর পড়া শুনা আছে। সে হিসেবে আমার অনেক বড় স্বপ্ন আছে। আর স্বপ্ন পূরণের জন্য যা যা করার দরকার সবি করবো ইনশাআল্লাহ।
ফাইজা রাফা : আপনার মতো অনেকে যারা লেখালেখিতে আসতে চান বা যারা লেখালেখি করতে চান তাদের প্রতি আপনার কী পরামর্শ থাকবে?
আবদুল কাদরি জীবন : নতুন যারা লেখালেখিতে আসবে তাদের আমি স্বাগত জানাই। তারা দেশ সমাজ এবং মানুষের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে সমাজের উন্নতি সাধনে সর্বাত্ব্যক চেষ্টা চালিয়ে যাবে। আমাদের লেখক সমাজে অনেকে গ্রুপ বিত্তিক লেখালেখি করে। আমি তাদেরকে সেটা থেকে বেরিয়ে আসতে বলব। লেখকরা স্বাধীন, লেখকরা যদি সত্য প্রকাশ থেকে বিরত থাকে সেটা বড়ই দুঃখজনক। লেখকরা লিখেন, আর মানুষ সেটা পরে সচেতন হয়। পাঠক সেটা থেকে উপকৃত হয়। এই লেখা দেশ ও সমাজের উপকারে আসে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শেক্সপিয়ার, কাজী নজরুল ইসলাম তারা যা লিখেছেন তা আরো হাজার বছর গেলেও মানুষ তা গ্রহণ করবে। কারণ তাঁরা যা লিখেছেন তা সমাজের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন।
ফাইজা রাফা : লেখালেখির মূল উদ্দেশ্য কী?
আবদুল কাদির জীবন : লেখালেখির মূল উদ্দেশ্য হলো-সমাজের বাস্তব চিত্র তুলে ধরা। সেই চিত্রটা আমরা ফুটিয়ে তুলার চেষ্টা করছি আর চেষ্টা করে যাবো ইনশাআল্লাহ ।
ফাইজা রাফা : স্বপ্ন পূরণ হওয়া মানে কী?
আবদুল কাদির জীবন : আমার দেশকে নিয়ে স্বপ্ন। প্রত্যেক ব্যক্তি যে যা স্বপ্ন দেখে সে তার দেশকে নিয়েই স্বপ্ন দেখে। দেশের মানুষকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে। দেশের মানুষের জন্য যদি আমি কিছু করতে পারি বা দেশের মানুষ আমার দ্বারা ভালো কিছু পায় বা দেশের মানুষ আমার ধারা উপক্রিত হয় সেটাই আমার স্বপ্ন।
ফাইজা রাফা : আজকে দর্শকদের উদ্দ্যেশে কী বলবেন?
আবদুল কাদরি জীবন : দর্শকদের উদ্দ্যেশে আমি বলবো, আজকের যে স্বপ্নচারী তারুণ্য অনুষ্টানে হলা সত্যিই আমি এখান থেকে অনেক উৎসাহ, ভালবাসা, উদ্দিপনা পেয়েছি। আমি আমার স্বপ্ন পূরণ করতে এই অনুষ্ঠান আমাকে আরো এক ধাপ এগিয়ে দিল। মানুষ স্বপ্ন ছাড়া বাচতে পারে না। সবার ভেতরে স্বপ্ন কাজ করে। আমাদের সবার স্বপ্ন বাস্থবায়ন করতে হবে। ইংরেজীতে একটি প্রবাদ আছে, If you dream it you can do it অর্থাৎ যদি তুমি স্বপ্ন দেখ, তাহলে তুমি এটা পূরণ করতে পারবে। আমরা আমাদের শিশুকে এমন একটি বাস্তব স্বপ্ন দেখাবো যেন সে সেটি পূরণ করতে পারে। ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখাটা আসলে সেটা স্বপ্ন নয়। যে স্বপ্ন ঘুমাতে দেয় না সেটা আসল স্বপ্ন। দর্শকদের উদ্দ্যেশে আমার বক্তব্য হলো আমরা শান্তি চাই। আমরা হানা-হানি, মারা-মারি চাই না। আমরা সুন্দর, সমৃদ্ধশীল একটি সুন্দর পৃথিবী চাই। একে অপরের সাথে ঝগড়া ঝাটি চাইনা। আমরা যদি ভালো কিছু তাহলে দেখবেন দেশ উন্নত হবে , সমাজ সুন্দর হবে, মানুষ উপক্রিত হবে আর তাহলেই পৃথিবীটা হবে এক হৃদয়ের এক আত্বার এবং শান্তির।
ফাইজা রাফা : অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের ‘স্বপ্নচারী তারুণ্য, অনুষ্টানে মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য।
আবদুল কাদরি জীবন : আপনাকে এবং সিলটিভিকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফাইজা রাফা : দর্শক আমরা এতক্ষণ শুনছিলাম লেখক আব্দুল কাদির জীবন এর লেখালেখির গল্প। আগামী সপ্তাহে দেখার আমন্ত্রন জানিয়ে শেষ করছি আজকের অনুষ্টান। আল্লাহ হাফেজ।
আবদুল কাদির জীবন একজন তরুণ সাংবাদিক ও ছড়াকার। সিলেটের প্রথম প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি, লিডিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে শেষ করেছেন বি.এ অনার্স (সম্মান)। বর্তমানে তিনি সিলেটের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল ডেইলি সিএন বাংলায় কর্মরত আছেন। জীবন কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ‘র আজীবন সদস্য, হাওরসাহিত্য গণপাঠাগারের আজীবন সদস্য, সিলেট ছড়াপরিষদের সদস্য, জয়বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদ, সিলেট জেলা শাখার সহ সাধারণ সম্পাদকের দায়ীত্বরত আছেন।
ফাইজা রাফা একজন তুরুণ সাংবাদিক ও উপস্থাপিকা। সে সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের একজন মেধাবী ছাত্রী। পাশাপাশি সিলেটের জনপ্রিয় অনলাইন টেলিভিশন ‘সিলটিভি‘র স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করছেন।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2025 AkashBangla. Developed by PAPRHIHOST
Theme Dwonload From Ashraftech.Com
ThemesBazar-Jowfhowo