১৬ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ রাত ৪:৪৮
সংবাদ শিরোনাম

কেমুসাস তরুণ সাহিত্য পুরস্কার-২০২২ : আবদুল কাদির জীবন

আবদুল কাদির জীবন
  • আপডেট শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
  • ৬৯ বার পঠিত

বাংলাদেশের প্রাচীন সাহিত্যের বিদ্যাপীঠ কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ (কেমুসাস) কর্তৃক “কেমুসাস তরুণ সাহিত্য পুরস্কার” প্রতি ১০০টি সাহিত্য আসর শেষে এই পুরস্কারের আয়োজন করা হয়। প্রতি বছরের ন্যায় এবারো কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ ঘোষণা করে কেমুসাস তরুণ সাহিত্য পুরস্কার-২০২২ এর লেখা আহবান। এই পুরস্কারটি পাঁচটি ক্যাটাগরি অন্তর্ভুক্ত যেমন-ছড়া-১০টি, কবিতা-১০টি, গল্প-৫টি, প্রবন্ধ-৫টি ও গান-১০টি। কেমুসাস ৩টি পৎরঃবৎরধ তে পুরস্কার দিয়ে থাকে।

কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ কর্তৃপক্ষ ‘কেমুসাস তরুণ সাহিত্য পুরস্কার’র জন্য সাহিত্য সংস্কৃতি ক্ষেত্রে একদল দক্ষ ও ভালো মানের লেখক প্যানেল নির্বাচন করেন। সেই প্যানেল পাঁচ বিভাগের (প্রবন্ধ, ছড়া, কবিতা, গল্প ও গান) লেখাগুলো সুনিপুণভাবে দেখে মার্ক দিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেন। এখানে একটি বিষয় উল্লেখযোগ্য, যারা লেখা জমা দেন তাদের নাম বা ঠিকানা বিচারক প্যানেলের কাছে যায় না। শুধু লেখা দেখে বিচারকরা মারকিং করে থাকেন। যার কারণে বলতে পারি কেমুসাস তরুণ সাহিত্য পুরস্কারের ক্ষেত্রে কোন অনিয়ম হয় না। কেমুসাস ২০২২ সালের পূর্বে পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম আগে ঘোষণা করা হতো। কিন্তু এইবার প্রথম পুরস্কার ঘোষণা করার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত কেউ জানেন না যে, কারা কারা পুরস্কার পাচ্ছেন। একটা স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে পুরস্কার দেয়া হয়েছে।

প্রতি বছর ন্যায় এবারো কেমুসাস তরুণ সাহিত্য পুরস্কার-২০২২ সফল করার লক্ষে নবীন প্রবীণ সাহিত্য সংস্কৃতি কর্মীদের নিয়ে আলোচনাসভার আয়োজন করে। বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি ২০২২) শহিদ সোলেমান হলে ১১০০তম সাহিত্য আসর উদযাপন ও কেমুসাস তরুণ সাহিত্য পুরস্কার-২০২২ প্রদান অনুষ্ঠান সফলের লক্ষ্যে রবিবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের কনফারেন্স রুমে সিলেটের বিভিন্ন সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সহসভাপতি ও অনুষ্ঠান বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক অধ্যক্ষ কবি কালাম আজাদের সভাপতিত্বে এবং সাহিত্য ও গবেষণা সম্পাদক আহমদ মাহবুব ফেরদৌসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভার শুরুতে কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মাওলানা শামসীর হারুনুর রশীদ। অনেক সুন্দর একটি অনুষ্ঠান ছিল।

নাট্যকার, স্থপতি শাকুর মজিদকে প্রধান অতিথি হিসেবে বরণ, তরুণ লেখকদের উৎসাহিত করা ও আয়োজন সফল করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ ও প্রস্তাব দিয়ে সভাকে প্রাণবন্ত করে তুলেন। উপস্থিত ছিলেন কেমুসাস’র সহসভাপতি ও অনুষ্ঠান বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য দেওয়ান মাহমুদ রাজা চৌধুরী, সাহিত্য সংসদের কোষাধ্যক্ষ ছড়াকার আব্দুস সাদেক লিপন এডভোকেট, আল ইসলাহ সম্পাদক গল্পকার সেলিম আউয়াল, সিলেট লেখিকা সংঘের সহসভাপতি মাসুদা সিদ্দিকা রুহী ও সহসাধারণ সম্পাদক ইশরাক জাহান জেলী, কবি কালাম আজাদ ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি নাজমুল আনসারী, জৈন্তিয়া ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি মোশতাক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মো. নাসির উদ্দিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আলমগীর চৌধুরী, “প্রাকৃত” সম্পাদক মামুন সুলতান, মাসিক শাহজালাল সম্পাদক রুহুল ফারুক, বিশিষ্ট লেখক সৈয়দ মুনতাজিম আলী বখতিয়ার, শাহপরান সাস্কৃতিক সংসদের সেক্রেটারি কামরুল আলম, বাংলাদেশ পোয়েটস্ ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কামাল আহমদ, লালশির এর পরিচালক ইফতেখার শামীম, প্রকাশনা সংস্থা দোআঁশ-এর স্বত্বাধিকারী লুৎফুর রহমান তোফায়েল, দিশারী শিল্পী গোষ্ঠীর সহপরিচালক আলিফ নূর, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গীকার শিল্পী গোষ্ঠীর পরিচালক আবুল হোসেন, সুরমা সাংস্কৃতিক সংসদের পরিচালক জুবায়ের মুরসালিন, ডিভাইন একাডেমির পরিচালক মাজেদ মাহফুজ, ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি “বইয়ের পাতা”র প্রতিনিধি সাঈদ আহমদ ও মো. আবু বকর সিদ্দিক, দক্ষিণ সুরমা সাহিত্য আসরের প্রতিনিধি এম এ ওয়াদুদ, গোয়াইনঘাট ছাত্র পরিষদের সভাপতি ইকবাল আহমদ, এম সি কলেজের সাংস্কৃতিক কর্মী মো. আবুল হোসেন প্রমুখ।

মতবিনিময় সভায় আগত সকলেই তরুণ লেখকদের পুরস্কার প্রদানের এ ঐতিহ্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং সাহিত্য আসরগুলোতে তরুণদের লেখা পাঠে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে কেমুসাসের এধরনের উদ্যোগ ব্যতিক্রমী বলে অভিহিত করেন। পাশাপাশি এ ধারা অব্যাহত রাখার পরামর্শ দেন।

দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি ২০২২)। কেমুসাস তরুণ সাহিত্য পুরস্কার-২০২২ জাঁকজমক পূর্ণ এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে দুপুর থেকেই কেমুসাসে ব্যাপক সাহিত্যপ্রেমীদের সমাগম দেখা যায়। বিকেল ৪টায় কেমুসাসের সাবেক সভাপতি কবি রাগিব হোসেন চৌধুরী পতাকা উত্তোলন, শান্তির দূত পায়রা এবং বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। পরে কেমুসাস প্রাঙ্গন থেকে একটি সুবিশাল র‌্যালি নগরীর চৌহাট্টা প্রদক্ষিণ করে কেমুসাসে এসে আবার সবাই সমবেত হন।

সিলেটের কবি, লেখক, গায়ক, সাহিত্য সংস্কৃতি কর্মীরা অনেক উৎসাহ ও আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন কখন মূল অনুষ্ঠানটি শুরু হবে। ঠিক সন্ধ্যে ৬টায় কেমুসাসের শহীদ সুলেমান হলে অধ্যক্ষ কবি কালাম আজাদের সভাপতিত্বে ও কেমুসাসের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হামিদ মানিকের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। সাহিত্য ও গবেষণা সম্পাদক আহমদ মাহবুব ফেরদৌসের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন কেমুসাসের সাবেক সভাপতি রাগিব হোসেন চৌধুরী, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমান চৌধুরী এডভোকেট, অধ্যাপক নন্দলাল শর্মা, অধ্যক্ষ সৈয়দ মুহাদ্দিস আহমদ, অধ্যাপক দেওয়ান এ এইচ মাহমুদ রাজা চৌধুরী। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সাবেক সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক গল্পকার সেলিম আউয়াল, কবি নাজমুল আনসারী, কবি সৈয়দ মবনু, আব্দুস সাদেক লিপন এডভোকেট, আব্দুল মুকিত অপি এডভোকেট। জীবন সদস্য এডভোকেট এমাদুল্লাহ শহীদুল ইসলাম শাহীন, অধ্যাপক ড. একেএম মাজহারুল ইসলাম, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহিত চৌধুরী। বিচারক প্যানেলের পক্ষে বক্তব্য রাখেন প্রাবন্ধিক আনোয়ার হোসেন মিছবাহ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ভ্রমণ সাহিত্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক ও নাট্যকার শাকুর মজিদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি পাঠ করেন মিনহাজ ফয়সল এবং শুরুতে কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন আব্দুল বাছিত।

পুরস্কারের জন্য ৫টি বিভাগ থাকলেও এর সাথে মিল না থাকায় গানে কাউকে পুরস্কৃত করা হয়নি। চারটি বিভাগে পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। যে চারজন উদীয়মান তরুণ লেখক কে কেমুসাস তরুণ সাহিত্য পুরস্কার ২০২২ প্রদান করা হয়েছে সেই তরুণরা হলেন-প্রবন্ধে আবদুল কাদির জীবন, ছড়ায় মুয়াজ বিন এনাম, গল্পে মিদহাদ আহমদ এবং কবিতায় ছালিক আমীনকে পুরস্কৃত করা হয়। পুরস্কৃতদের সম্মাননা ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট এবং গিফট চেক দেয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাট্যকার স্থপতি শাকুর মজিদ বলেছেন, ‘বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস প্রায় ২০০ বছরের। এর মধ্যে একটানা ১১০০ সাহিত্য আসর ইতিহাসের আর কোথাও হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ থেকে জ্ঞান লাভ করেছেন বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমদ এবং মুহম্মদ জাফর ইকবালসহ অনেক লেখক। আমাদের তরুণ লেখকদের কাছে প্রয়োজন নতুন একটি গদ্যভাষা। যা এই প্রজন্মের তরুণরা তৈরি করবে।’

শাকুর মজিদ বলেন, ‘লেখকরা পুরস্কার পাওয়ার জন্য লিখেননা। পুরস্কার কাউকে বড় করে না। সুতরাং তোমাদের চেষ্টা থাকবে পুরস্কার যেন তোমাদের কাছে চলে আসে, পুরস্কারের কাছে তোমাদের যেতে না হয়। পাঠকের ভালোবাসার চেয়ে লেখকের জন্য আর বড়ো কোনো পুরস্কার নেই।’

স্বাগত বক্তব্যে কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক, দৈনিক সিলেটের ডাকের নির্বাহী সম্পাদক, বিশিষ্ট গবেষক আবদুল হামিদ মানিক বলেন, ‘কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ লেখকদের উৎসাহ-উদ্দীপনা দেয়ার জন্য দীর্ঘদিন থেকে পুরস্কার দিয়ে আসছে। পুরস্কৃতদের আনন্দ সবাইকে ভাগাভাগি করে নিতে হবে। নতুবা মনের কার্পণ্য থেকে যাবে।

লেখক:
জীবন সদস্য:
কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ

সাংগঠনিক সম্পাদক:
সিলেট লেখক পরিষদ, কেন্দ্রীয় সংসদ

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2025 AkashBangla. Developed by PAPRHIHOST
Theme Dwonload From Ashraftech.Com
ThemesBazar-Jowfhowo