১৬ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ সন্ধ্যা ৭:৩৬
সংবাদ শিরোনাম

মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর আলাদা করা সময়ের দাবী- এ কে এম আব্দুল্লাহ

আকাশ বাংলা ডেস্ক
  • আপডেট শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
  • ৮৭ বার পঠিত

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা সিলেট অঞ্চলের আঞ্চলিক উপ-পরিচালক এ কে এম আব্দুল্লাহ বলেছেন, মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর পৃথক করা এখন সময়ের দাবী।এতে প্রশাসনিক সকল জটিলতা ও সমস্যা দূর হবে।

এ কে এম আব্দুল্লাহ শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সিলেটের সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ ও সদস্যদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।

সিলেট জেলা শিক্ষা অফিসার এ এস এম আব্দুল ওয়াদুদের সভাপতিত্বে সিলেট সরকারী অগ্রগামী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন, অগ্রগামী স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক হেপী বেগম,জৈন্তাপুর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহানা জাফরিন রোজী, দক্ষিণ সুরমা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুচরিতা দাস। সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আভা রানী দেব এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথি বলেন, আমি নিজেও অনেক বিড়ম্বনা ও বৈষম্যের শিকার হয়েছি। ঢাবির শহীদুল্লাহ হলে থাকতে নামাজ পড়তাম বলে আমাকে কর্মজীবনে বিএনপি জামায়াত ট্যাগ দেয়া হয়। তিনি বলেন, শিক্ষকদের অনেক সমস্যা আছে যা আপনারা তুলে ধরেছেন। আপীলের রায় হয়ে গেলে টাইম স্কেল বাস্তবায়নে সমস্যা থাকবে না। পদোন্নতি হবে, সময় লাগবে। তিনি বিভাগীয় অনেক অসঙ্গতি তুলে ধরে বলেন, বদলী ডিডি করবেন লিখিত আছে, বাস্তবে এখনো ক্ষমতা পাই নাই।শূন‌্য পদের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।পদায়নের ব্যপারে কাজ চলছে। সিনিয়র শিক্ষক ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পদোন্নতি ও পদায়নের বিষয়টি আলোচনা চলছে।স্কুলগুলোতে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদ পূরণ ও শিক্ষকদের সরকারী কাজে যথাযথ মর্যাদা প্রদানে সংশ্লিষ্টদের আরো আন্তরিক হতে হবে।

প্রধান অতিথি শিক্ষকদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, নিজেদের মধ্যে দলাদলি, গ্রুপ- উপগ্রুপ এগুলো করবেন না। মনোমালিন্য করবেন না।নিজেদের স্বার্থের জন্য নয়, শিক্ষকদের স্বার্থে কাজ করুন।

অনুষ্ঠানে সভার লক্ষ ও উদ্দেশ্য,শিক্ষকদের ন্যায্য দাবী দাওয়া এবং পদোন্নতি ও পদায়নের বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখেন, সিলেট সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক ও বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় নেতা আবু নছর মোহাম্মদ সুফিয়ান।সিনিয়র শিক্ষক শহীদুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় ধন্যবাদ বক্তব্য রাখেন, সরকারী অগ্রগামী স্কুল এন্ড কলেজের সিনিয়র শিক্ষক তাজুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, সিলেট সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম, সিনিয়র শিক্ষক আবুল খায়ের ,সিনিয়র শিক্ষক শওকত হোসেন,সিনিয়র শিক্ষক মাশুক মিয়া, সিনিয়র শিক্ষক এমদাদুল হক, জয়নাল আবেদীন, সুনামগঞ্জ সরকারী জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক তালেব আলী,হবিগঞ্জ সরকারী হাই স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক কাওসার আহমদ, বানিয়াচং এল আর সরকারী হাই স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক জাকির হোসেন,অগ্রগামী স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক নেপুর চন্দ্র পাল এবং সিলেট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়,লাক্কাতুরা এর সিনিয়র শিক্ষক অলক রঞ্জন পাল।

মতবিনিময় সভায় শিক্ষকরা বিভিন্ন দাবী ও সমস্যার কথা তুলে ধরেন। তারা বলেন, লাল ফিতার দৌরাত্মে এখনো আমরা বন্দী। আমাদেরকে শিক্ষক নয় কর্মচারী হিসেবে অনেক ক্ষেত্রে গণ্য করা হয়।তাদের কথায় সবচেয়ে বেশী আলোচিত হয় বদলী বৈষম্য।বদলী বৈষম্যের নিপীড়নের শিকার শিক্ষকরা। এছাড়া সিলেটের সরকারী স্কুলগুলোতে প্রধান শিক্ষক নেই,ভারপ্রাপ্ত দিয়ে চালানো হচ্ছে।অথচ সিলেট বাড়ী প্রধান শিক্ষকদের, সিলেটের বাইরে তাদের পোস্টিং। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসাররা শিক্ষকদের পদে ভাগ বসাতে চায়।সারা দেশে প্রায় ২০০ প্রধান শিক্ষক পদ খালি এবং ৪৭৮ টি সহকারী প্রধান শিক্ষক পদ খালি আছে।শিক্ষকরা বলেন,সেসিপের অস্থায়ী অফিসাররা শিক্ষকদের বৈধ সুযোগ সুবিধায় দিকে হাত বাড়ায়।শিক্ষকদের বৈধ সুযোগ তারা ছিনিয়ে নেয় এবং নিতে চায়। তারা বলেন, টাইম স্কেল নিয়েও আমরা বৈষম্যের শিকার।জাতীয়করণের ক্ষেত্রেও স্কুল কলেজের মধ্যে বৈষম্য বিদ্যমান। আবার সহকারী প্রধান শিক্ষক ও সিনিয়র শিক্ষক একই বেতন গ্রেড। ফলে পদায়নে ও পদোন্নতিতে সমস্যা হচ্ছে।নিয়োগবিধিতে সহকারী প্রধান শিক্ষক কিভাবে হবে তা স্পষ্ট নয়। তারা বলেন, দেশের নয়টি অঞ্চলের ডিডি ভারপ্রাপ্ত। প্রধান শিক্ষক,বিদ্যালয় পরিদর্শক পদ সমান।তাই নিয়োগ বিধি সংশোধন দরকার, পরিবর্তন প্রয়োজন।শিক্ষাবোর্ডের সহপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সেকশন অফিসারদের দখলে। নায়েম ও এন সি টিবিতে সিনিয়র শিক্ষকদের পদায়ন করা দরকার।টাইম স্কেল সমস্যা সমাধান সহ উপজেলা শিক্ষা অফিসার, জেলা শিক্ষা অফিসার,সহকারী প্রধান শিক্ষক পদায়ন জরুরী ইত্যাদি।

শিক্ষকরা বলেন, শিক্ষক সমিতি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান নয়।এটা পেশাজীবি সংগঠন।এখানে ঐক্যের প্রয়োজন আছে।ঐক্য ছাড়া দাবী আদায় হয় না। অকর্মণ্য শিক্ষক রাজনীতি পরিহারের আহবান জানান তারা।উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারগণ ও একাডেমিক সুপারভাইজাররা কর্তৃত্ব দেখায় বলে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।তারা বলেন, অধিদপ্তরকে পৃথক করতেই হবে। নতুবা হবে, সহসাই হচ্ছে না বলে ফাইল আটকে থাকবে। প্রশিক্ষণ কালীন বদলীর বিড়ম্বনার কথাও তারা জানান। শিক্ষকরা বলেন,বৈষম্য দূর করতে হবে নিজেদের মধ্য থেকেও।তারা বলেন, ফ্যাসিবাদী শক্তিকে শুধু রাজনৈতিক দল সরাতে পারেনি। শিক্ষার্থীসহ সম্মিলিত শক্তি পেরেছে।তাই অধিকার আদায়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সক্রিয় থাকতে হবে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2025 AkashBangla. Developed by PAPRHIHOST
Theme Dwonload From Ashraftech.Com
ThemesBazar-Jowfhowo