১৬ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ রাত ৪:৪৭
সংবাদ শিরোনাম

পবিত্র শবে বরাত

দেওয়ান এ এইচ মাহমুদ রাজা চেীধুরী
  • আপডেট শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
  • ৮৩ বার পঠিত

 

আজ পবিত্র শবে বরাত। ১৪ শাবান । এ রাতটি ইসলামের দৃষ্টিতে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে বিশ্বজুড়েই মুসলমানরা এ রাত উদ্‌যাপন করে থাকেন। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এ রাতে দল বেঁধে মসজিদে রাতজুড়ে আল্লাহর ইবাদত করেন। অতীতের গুনাহের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন এবং ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ার জন্য দোয়া করেন। রাতের শেষ প্রহরে সেহরি খেয়ে পরের দিনটি সিয়াম সাধনায় পালন করেন অনেকে। আমাদের দেশেও বেশ গুরুত্বের সঙ্গে এ রাত পালিত হয়। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ইবাদতের সুবিধার্থে এ রাতের পরদিন সরকারি ছুটি থাকে।

হাদিসে এসেছে, এ রাতে মহান আল্লাহ মানুষের প্রতি বিশেষ অনুগ্রহের দৃষ্টি দেন এবং পাপকর্ম ক্ষমা করে গুনাহগারদের জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। তাই এ রাতকে শবে বরাত বা মুক্তির রাত বলা হয়। এ রাতে পুরো বছরের ভাগ্য, রিজিক, জন্ম, মৃত্যুসহ মানবজীবনের অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হওয়ার কথা হাদিসে বিবৃত হয়েছে। তাই ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছে রাতটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।

আছে কি কোনো ক্ষমা প্রার্থনাকারী, আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। আছে কি কোনো জীবিকা সন্ধানকারী, আমি তাকে জীবিকা প্রদান করব। আছে কি কোনো ব্যথিত, বিপদগ্রস্ত, আমি তাকে সমস্ত বিপদ-আপদ থেকে নিষ্কৃতি প্রদান করব। এভাবে ফজর পর্যন্ত মহান দয়ালু প্রেমময় আল্লাহপাক তার বান্দাদের আহ্বান করতে থাকেন। এই রাতটির নাম হলো লাইলাতুল বারাত বা শবে-বরাত।

 এ রাতে অনেককে পটকা ও আতশবাজি পোড়ানো, দল বেঁধে ঘুরে বেড়ানো, লাউডস্পিকারে উচ্চ স্বরে অনুষ্ঠান করাসহ বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়াতে দেখা যায়; যা আশপাশে অবস্থান করা বিশ্রামরত মানুষের বিশ্রামে এবং ইবাদতরত ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ইবাদতে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটায়। তাই সমাজে শান্তি বিনষ্টকারী এসব কর্মকাণ্ড থেকে সবার বিরত থাকা উচিত।

যে কয়েক শ্রেণির মানুষ এ মহিমান্বিত রাতে আল্লাহর ক্ষমা থেকে বঞ্চিত হবে বলে হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে, হিংসুক তাদের অন্যতম। তাই মানুষের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ একেবারে ঝেড়ে ফেলাই শবে বরাতের প্রধান শিক্ষা। এ ছাড়া অতীতের গুনাহ, অন্যায়, অনাচার, প্রতারণা, অনিয়ম, দুর্নীতিসহ সব ধরনের অপরাধ থেকে একনিষ্ঠ হয়ে তওবা করা এ রাতের শ্রেষ্ঠ শিক্ষা। ভবিষ্যতে কোনো অপরাধে না জড়ানোর দৃঢ় অঙ্গীকার করা এ রাতের সেরা অঙ্গীকার। পাশাপাশি পার্থিব জীবনের সৌভাগ্য-সমৃদ্ধি কামনা এবং পরকালের মুক্তির জন্য আল্লাহর দরবারে আহাজারি করে রাতটি কাটান মুসলমানরা।

তবে অন্যায়, অপরাধ ও গুনাহের কাজে নিজেকে যুক্ত রাখার মানসিকতা লালন করে এ এক রাতের ইবাদতে আল্লাহর শাস্তি থেকে মুক্তি পাওয়া এবং পরকালীন সাফল্য লাভের আশা দুরাশা বইকি! কারণ, শবে বরাতসহ এমন সব মহিমান্বিত দিনরাত মূলত মুমিনদের নতুন করে ইমান ও আত্মসংশোধনের পথে এগিয়ে যাওয়ার উপলক্ষ মাত্র। এসব উপলক্ষকে কাজে লাগিয়ে পরকালীন জীবনের জন্য পাথেয় সঞ্চয় করাই হবে সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।

সুতরাং শবে বরাত হোক হিংসা-বিদ্বেষ থেকে নিজেদের মুক্ত করার রাত; মনকে শুদ্ধ ও পাপমুক্ত রাখার দৃঢ় সংকল্পের রাত; অন্যায়, জুলুম, অনাচার থেকে মুক্ত হয়ে জাতীয় জীবনের সব সংকট কাটিয়ে সুস্থ-সুন্দর ভবিষ্যৎ নির্মাণ করার দৃপ্ত অঙ্গীকারের রাত। সম্প্রীতি, ইবাদত, ক্ষমা ও কল্যাণে ভরে উঠুক সবার জীবন।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2025 AkashBangla. Developed by PAPRHIHOST
Theme Dwonload From Ashraftech.Com
ThemesBazar-Jowfhowo